শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

পরিবর্তনের জিজ্ঞাসা

ওগো নদী তুমি বইছ কেন নিরবধি এই দিকটি ধরে?
ওহে অন্তরীক্ষ অমন করে কাঁদছ কেন তুমি অবিরত?
ছিটকে ফেলছ কেন জল এই অস্থির পৃথিবীর তরে?
এই মাঠ তুমি কেমনে হলে বল এমন গাঢ় সবুজ বর্ণ?
যথাসময়ে তোমার বুকেই তো ধরো এতোসকল কষ্ট-শ্রমের স্বর্ণ।
ওহে শৃঙ্খলা তুমি কেন রাখলে মোরে এমন বদ্ধ? করলে মুক্তির দ্বার রুদ্ধ।
হে ধর্ম তুমি কেন করতে পারনি এখনো মোরে সরল, শুদ্ধ?
ও বিলাসিতা, তুমি কেন এমন নিস্তেজ হলে? দিতে পার না এখন আর মোরে আনন্দ।
ওহে জীবন তুমি কেন ধরো উপন্যাসের বাস্তবতা? ধরতে পারনা কাব্যের ছন্দ?
ওগো ভালোবাসা তুমি এমন না হয়েও কেন বল এমন হলে?
বদল করলে যেন নিজেকে লোভ, হিংসা আর ঘৃণার ছলে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ে গুলাগুলি( কবিতা )

বিশ্ববিদ্যালয়ে হঠাৎ করেই গুলাগুলি
শুরু হয়ে গেছে মিসিলধারীদের ঢুলাঢুলি,
ওরা আজ মেতে উঠেছে ধ্বংসের খেলায়
হঠাৎ করেই যেন ক্যাম্পাস পরিনত হল
অস্র আর বারুদের মেলায়।

বিল্ডিঙে বিল্ডিঙে গিয়ে গ্লাস ভাংচুর
আগে কখনও শুনা হয়নি
এমন ধ্বংসের সুর।
কখনও ভাবিনি রাজনীতির প্রতিযোগিতা
হতে পারে এমন রূঢ়।
কোনো এক অশরীরী যেন
দূর থেকে নাচাচ্ছে আপন শুঁড়।

প্রতিবাদ ঝড় তুলছে যেন
বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমাহীন ধুলা ,
আর এমন নিকৃষ্ট পরিস্তিতির শিকার হচ্ছে
আমাদের নিরীহ চার চাকার বাসগুলা।

চারটি ভিন্ন সময় নিয়ে ছোট্ট একটি কবিতা

হ্যাঁ আমি করব করব আমার জীবন বলীদান
মুক্তির জন্য করব নিজেকে চিরতরে অন্তর্ধান,
তবুও ছাড়বো না আমি মুক্তির মায়া
এর মাঝেই যে নিহিত আছে বিধাতার ছায়া।
 

যুদ্ধ যুদ্ধ যুদ্ধ---------
চারিদিকে শুধু কান্না আর হাহাকার,
তারপরও চালিয়ে যাচ্ছি যুদ্ধের রথ
পাবোই পাবো একসময় আমরা মুক্তির পথ।

আহ!! আজ আমরা মুক্ত
বিশ্ব সংঘে আমরা এখন স্বাধীনভাবে যুক্ত ,
নাহ!! বৃথা যায়নি আমাদের এতোখানি রক্ত
আজ সবাই জানে আমরা ছিলাম স্বাধীনতার কতোখানি ভক্ত।

মারামারি, হানাহানি হায়!! আজ আমরা মৃত্যু ভয়ে শঙ্কিত
বিশ্ব মানচিত্রে আমরা এবার দুর্নীতির পেঞ্চিলে অঙ্কিত,
নিজেদের যখন আমরা করেছি নিজেদেরই দুশমন
কি দরকার আমাদের আর নৃশংস হানাদারগণ ?

রাজনীতি নিয়ে একটি রম্য কবিতা

রাজ"নীতি"করা আজ করছেন সবখানে রাজ
তাদের অভিধান থেকে ‘নীতি’ শব্দটি বাদ পড়েছে আজ
স্বার্থ, অর্থ আর লোকদেখানোই
এখনকার পঞ্জিকা স্রোতে তাদের সারাদিনের কাজ।
আর নির্বাচনের কিছুদিন পূর্বে
আশার বাণী আকাশে বাতাসে উড়বে--
তোমরাই তো আমার সব
সাক্ষী থাকবে এই কালো মাইক
আর আমাদের সকলের ত্রাণকর্তা- ঐ রব,
যতদিন থাকছো না তোমরা আমায় ছাড়া
কথা দিচ্ছি না খেয়ে কেউ পরবে না মারা,
আমি ঘনিয়ে আনবো মানুষে মানুষে সমতা
এ অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকবে ভালবাসা আর মমতা।
আমি তো শুধু সামান্য প্রতিনিধি মাত্র
তোমরাদের কাছেই তো রইবে
আলাদীন-প্রদীপ সদৃশ আসল ক্ষমতার পাত্র।

এখন আমি নির্বাচিত প্রতিনিধি
রাখব আমার ক্ষমতার গতিবিধি,
যেখানে-যেখানে থাকবে টাকার গর্ত
সেখানেই আমি আছি দ্বিধাহীন নিঃশর্ত,
আর যে স্থানে আছে শুধু দুঃখ, কষ্ট আর জ্বালা
গিয়েই চলে আসবো সেখান থেকে
লাগিয়ে গলায় বর্ণময় ফুলের মালা।
জনগনের কল্যাণেই যদি থাকি সদা ব্যাস্ত,
কিভাবে বাড়াবো নিজ সম্পদের স্বাস্থ্য?

কৃষাণের মুখের ঝকঝকে হাসি
মুহূর্তেই করে দেয় ওরা রক্তহীন বাসি,
কাজ যদি না হয় কথার ছলে
তবে ছিনিয়ে নেয় তারা ক্ষমতার বলে।
কারখানার শ্রমিকদের হয় ঠগানো
উগ্রপন্থীদের উগ্র লেজ কে হয় রগানো,
রিক্সা চালকের ঘর্মাক্ত গালে চড়--
নেতাজি আসছেন চকচকে গাড়িতে করে
পথ ছেড়ে সর তোরা, পথ ছেড়ে সর।
আর ইনকাম ট্যাক্সকে দিতে ফাঁকি
কিছুই রাখেন না ওরা করার বাকি,
আলমারিতে জায়গা না হলে
ডলার সব বালিশের মধ্যে রাখি।

হঠাৎ করেই গলিতে গলিতে সন্ত্রাসী হামলা
নেতাজির গাঢ়ে এবার গুরুভার—“মিডিয়া-সামলা”
উমমম--করা হয়েছে সন্ত্রাসদের উপর মামলা
আশা করি সহজেই মিটে যাবে এসব ঝামলা,
আর হে—এ হামলায় আহত হয়েছে যারা
তারা সবাই ছিলো সন্ত্রাসদেরই করা ভাড়া।

কব্জিতে নিয়ে মোদের মূল্যবান ভোট
রাজনিতিকরা গড়েন নানাবিধ ফন্দিবাজ জোট,
আর কোটি টাকার প্রাডোতে বসে
শ্রমিকদের সমস্ত রক্ত চূষে
মুখ দিয়ে শুধু নির্গত করেন- মাই ফোট, মাই ফোট।

ছেঁকা খাওয়া নিয়ে একটি রম্য কবিতা

অনেক হয়েছে হাত ধরাধরি করে হাঁটাহাঁটি
দয়া করে এবার আমায় যেতে দাও।

ওহো! কি এমন তাড়া তোমার এতো জলদি যেতে চাও
যাবার আগে গলা ছেড়ে নাহয় একটি গানই গাও।

এমনিতেই হয়ে গেছে অনেক দেরি, সন্ধ্যা যে হতে চলেছে
বরপক্ষ দেখতে আসবে আমায়, এরকমটাই তো মা বলেছে।

কি! আমার সাথে করে প্রেম, ভালোবাসার ইয়ে
করতে চাও এবার তুমি অন্য কাউকে বিয়ে?!

ভালোবাসি তোমায়, কখনো তো একথা আমি বলিনি--
তোমাকে আমি দেখেছি সর্ব মুহূর্ত এক বন্ধুর চক্ষে
তোমার জন্য তো ধরেনি প্রেম কখনো আমার বক্ষে।

তুমি কি ভেবেছ তোমায় আমি এতো সহজেই ছাড়বো?
তোমার ছলনা আর গরিমার কাছে নাহি আমি হারবো।
নিজে মরতে না পারলে তবে তোমাকেই আমি মারবো।
----------------------------------------------------------
----------------------------------------------------------
শুরু হয়েছে বৃষ্টি, কখনো সুর তুলছে রিনঝিন, কখনো টপটপ--
ভিজছে ক্যাম্পাসের লম্বা পাকা রাস্তা আর সারি করা গাছপালা
পড়িয়ে দিচ্ছে যেন ছেলেটির গলায় প্রতারণা নামক ফুলের মালা।
 
 


মেঘবৃষ্টির স্বন

বিজলীর আলো আর কান ফাটানো ভয়ানক শব্দ, আহ!
ভয়ের মধ্যেই যেন পাচ্ছি আনন্দ আর কণ্ঠে হয়েছি বিভোর
মেঘ, বৃষ্টির আর বোধহয় হাওয়ার কণ্ঠে হয়েছি বিভোর
তাতে উৎসারিত হতে চায় হৃদয় থেকে শুধু বাহ! বাহ!
ভিজেছে মাটি, ভিজেছে ঘাস আর এবার ভিজলো মোর মন
পানি ধরেছে আনাচে-কানাচের ছোট-বড় গর্ত আর রাস্তা-পাশের নালা
সুরের প্রভাবে যেন করেছে মাতাল মেঘ-বৃষ্টির হরেক রকমের স্বন।
বিশুদ্ধ শাদা আকাশ, রঙিন পৃথিবী বিধবা নাকি সতী ধরতে পারি না, আহ!
দ্বিধার মধ্যেই যেন আনন্দ, হৃদয় থেকে উৎসারিত হচ্ছে শুধু বাহ! বাহ!
ভিজিয়ে চুল, বাজিয়ে মনে ঢোল আনন্দপিপাসুরা করছে রাস্তায় বৃষ্টিস্নান
মনে করিয়ে দেয় রবি ঠাকুরের বৃষ্টি নিয়ে সেই ঘোর লাগা সকল গান।

তার কান্না

অশ্রু ধারা ছুটিয়েছে তার কাতর দুটি লোচন
করিবার চায় সে পতি হারানোর দুঃখ মোচন,
না না, গ্রাস করেনি পতিকে এসে নিয়তির মরণ
জীবন বাস্তবতার দ্বন্দ্বে করতে হয়েছে তাদেরকে
বিচ্ছেদের বর্ণহীন, বেদনামাখা সূতাকে বরণ।


করতে পারেনি সে ভালবাসা প্রতিমাকে জয়
পার করতে হবে জীবনের সাঁকো একা
এটাই কি এখন তার চিন্তা অথবা ভয়?
নাকি স্মৃতি মন্থনের তাড়নায় ক্ষণে ক্ষণে
হচ্ছে তার ভাঙা হৃদয় আরও ক্ষয়?

অশ্রুজল তার গালে ফেলেছে ল্যাকরিম্যাল ফ্লুয়িডের পাতলা আবরণ
ইহা কেমনে করিবে তার হারানোর ব্যথা, ক্লেশকে নিবারণ?
তার হাহাকারে যেন সৃষ্টি হয় মেঘমালা, পাহাড়সারি আর তারাপুঞ্জের বুকে
এক গভীরতম খারাপ লাগার, হৃদয় ফোলানো শিহরণ।

জানলার গ্রিলের ফাঁকে তার দুটি ঊর্ধ্বগামী জিজ্ঞাসু দৃষ্টি
করছে যেন প্রশ্ন কেন করলেন তিনি তার সাজানো বাগানে
এমন হারানোমাখা, ত্যাগ আচ্ছাদিত প্রলয়ের সৃষ্টি?

কালবৈশাখী

শুরু হয়েছে এবার অপেক্ষার কালবৈশাখী
প্রকৃতির লাগামহীন উন্মাদনার এক উৎসব
যার প্রদর্শনীতে তৃপ্ত হয় মোর কাতর দুটি আঁখি,
যার এলোমেলোতা আর ক্ষিপ্রতার ছুয়ায় জুড়ায়-
মোর নিস্তব্দ, নিঃসঙ্গ আর হাহাকারময় প্রাণ পাখি।

নেচে উঠছে গাছেরা ঝাঁকিয়ে তাদের পাতা আর অসম ডাল
নূপুরের সুর তুলছে যেন, মোর বাড়ির পাশের অনতিবৃহৎ ঐ খাল।
মেঘেদের আজ অনেক তাড়া, ছুটছে তারা লাগামছাড়া
প্রবল ঘূর্ণির আঘাতে এবার, পড়ছে ক্ষুদ্র চারা গাছটি মারা।
তীরের দিকে ফিরছে দ্রুত মাঝিদের ছোট খেয়ার তরী
সতর্ক সংকেত দিচ্ছে তাদের দূরে তমসার কোনো এক আশাবরী।

ভয়ে লোকেরা অস্থির, জানলায় কি যেন করছে কনকন,
প্রকৃতি যেন আজ করেছে সীমা ছাড়ার পণ।
হায়! আল্লাহ, হায়! জিসাস, হায়! ভগবান----
হঠাৎ করেই বেড়ে গেল যেন সবার ধর্মের টান,
একই সারিতে এবার সকল মুসলমান, খ্রিস্টান আর হিন্দু
প্রকৃতির তরে আমরা সবাই নিতান্তই ক্ষুদ্র এক এক বিন্দু।
কাছেই কোথাও শুনা যাচ্ছে যেন নবজাতকের ক্রন্দন
মাতাল প্রকৃতি করেছে দৃঢ় তার চিরচারিত বন্ধন।

জেগে উঠছে যেন মোর শরীরের প্রতিটি মৃতপ্রায় অণু
প্রশান্তির বন্যায় ভরে গেছে মোর খরায় আক্রান্ত তনু।
ধন্যবাদ হে ঈশ্বর, আমার ধন্যবাদটি তুমি নিয়ো
এই ধন্যবাদের খাতিরেই নাহয়
পুনরায় এই মুহূর্তটি তুমি আমায় দিয়ো।
 
 
 


কবিতার খাতা খালি


হঠাৎ করেই আজ হয়ে গেল মোর কবিতার খাতা খালি
কতো দুঃখ-বেদনা, ভালবাসা-ছলনা দিইয়েছিলুম এর মধ্যে ঢালি,
কোথাও ছিল তার প্রাণ চাঞ্চল্যের কথা, কোথাও ছিল তার প্রেমের বাণী
আরও এঁকেছিলুম সমুদ্রতটের সৌর আলোতে চিকচিক করা মুক্তাময় বালি,
কাব্যের বেহালায় প্রশংসা গীত গেয়েছিলুম দীর্ঘ জোছনা রাতের চাঁদ করা ফালি ফালি।
আজ কেমন করে হয়ে গেল মোর কবিতার খাতা খালি??!!

খাতাটির মধ্যে রেখেছিলুম আমি সকালের নতুনত্ব, দুপুরের ক্লান্তি
আরও কহেছিলুম প্রকৃতির লীলায় লুকিয়ে আছে কতোখানি ভ্রান্তি,
তুলে ধরেছিলাম তার মধ্যে বিকালের স্নিগ্ধতা আর সন্ধ্যার আভা
মানব স্মরণীয় আর মানব হিতৈষীরাও বাড়িয়েছিলেন এর শোভা,
বলেছিলুম কিভাবে অল্প পানিতে রিনঝিন ঢেউ তুলে দক্ষিণের বাতাস
আর তপ্ত দুপুরে খাদ্য জোগাতে না পেরে দাঁড়কাকটি বসে থাকে একাকী হতাশ।

খাতাটিতে স্থান পেয়েছিল ভুকম্পন, প্লাবন, জোয়ার, ভাঁটা, খরা আর বন্যা
কহেছিলুম কিভাবে প্রণয়ের সূচে গেঁথেছিল প্রজার ছেলের সাথে রাজার কন্যা।
আজ হঠাৎ করেই হয়ে গেল মোর কবিতার খাতা খালি
প্রবৃত্তি জাগছে হাহাকার আর হতাশা পুড়িয়ে
মোর বুকে নরকের আগুন জ্বালি,
কিন্তু তাতেও ব্যর্থ আমি, জীবন বাগানের আমি যে শুধু অসহায় এক মালি।

বিভিন্ন ধরণের ফ্রেমওয়ার্ক সহ জাভাস্ক্রিপ্ট শেখার গাইড লাইন

প্রথমেই বলে নেয়া প্রয়োজন যে এটা কোনো টিউটরিয়াল নয়। আমি প্রোগ্রামিং রিলেটেড যতগুলো বই পড়েছি প্রায় প্রত্যেকটাতেই কম-বেশি কিভাবে এগুতে হবে তার একটা ধারনা দেয়া থাকতো। এরকম গাইডলাইন যে খুবই উপকারী তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এইসব বই থেকে যা জানতে পেরেছি আর নিজের অভিজ্ঞতা থেকে যা বুঝতে পেরেছি নিচের লেখাগুলি তারই বহিংপ্রকাশ। এটা জাভাস্ক্রিপ্ট শেখার গাইডলাইন হলেও আমি এখানে এমন কিছু কথাও বলেছি যা আপাতপক্ষে অপ্রাসঙ্গিক বলে মনে হলেও আসলে তা মোটেই নয়।

জাভাস্ক্রিপ্ট শেখার কয়েকটা টিপস নিচে পয়েন্ট আকারে দেয়া হল

## জাভাস্ক্রিপ্ট শেখা শুরু করার আগে HTML আর CSS সম্পর্কে কিছুটা ধারণা নিয়ে রাখা ভালো, আসলে নিয়ে রাখাই উচিত। কারও কারও মনে প্রশ্ন জাগতে পারে জাভাস্ক্রিপ্ট একটা স্বতন্ত্র প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ( আসলে স্ক্রিপ্টিং ল্যাঙ্গুয়েজ ) হওয়া সত্ত্বেও এটা শিখতে হলে কেন আগে HTML, CSS শিখতে হবে প্রশ্নটা হয়তোবা যুক্তিসঙ্গত কিন্তু যারা জানেন জাভাস্ক্রিপ্ট শেখার প্রয়োজনীয়তা কি অর্থাৎ কেন তারা এটা শিখবেন তাদেরকে আর এই বিষয়ে কোনো ব্যখ্যা দেয়ার প্রয়োজন হবে না, তাছাড়া যেহেতু আমি এখানে জাভাস্ক্রিপ্ট শেখার গাইড লাইন নিয়ে লিখতে বসেছি তাই আমি HTML, CSS নিয়ে বিস্তারিত লিখতে যাব না। তবে জাভাস্ক্রিপ্ট শিখতে হলে যে HTML, CSS এর মাস্টার হতে হবে এমন কোনো কথা নেই, এই দুটি বিষয় সম্পর্কে খুব অল্প জ্ঞান থাকলেই চলবে। কিন্তু কেউ যদি চায় যে সে জাভাস্ক্রিপ্ট এর মাস্টার হবে তখন অবশ্যই তার HTML, CSS এর মোটামুটি সকল ট্যাগ( আশা করি ট্যাগ কি তা আপনারা জানেন ) নাড়াছাড়া করার মতো দক্ষতা থাকতে হবে। কেউ কেউ হয়তো এই কথায় বিরক্ত হতে পারেন, হওয়াটাই স্বাভাবিক, নাড়াছাড়া করার মতো দক্ষতা আবার কি? আসলে HTML, CSS এর মোট ট্যাগ সংখ্যা অনেক, সঠিক সংখ্যা আমি নিজেও জানি না। এতগুলো ট্যাগ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য মানুষের নিউরন সেলে ধরে রাখা অসম্ভব। তাছাড়া প্রত্যেকটা ট্যাগের( বেশিরভাগ ) অনেকগুলো property, method এবং value থাকে যাদেরকে একই ট্যাগের সাথে বসালে ভিন্ন ফলাফল পাওয়া যায়। আবার কিছু ট্যাগ আছে যাদের কাজ প্রায় একইরকম, সেক্ষেত্রে উপযুক্ত ট্যাগ নির্বাচন করা জরুরি হয়ে পরে কারণ আপাত দৃষ্টিতে এক মনে হলেও প্রকৃত অর্থে তাদের কাজ করার প্রক্রিয়া ভিন্ন, তাছাড়া তখন আপনাকে SEO( Search Engine Optimization ) এর ব্যপারটিও মাথায় রাখতে হবে কারণ অনেক ট্যাগ আছে যেগুলো SEO এর জন্য মোটেই ভালো নয়, একজন ভালো ডেভেলপার হতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই প্রত্যেকটি বিষয় মাথায় রেখেই কাজ করতে হবে


## HTML, CSS যেমন অসংখ্য ট্যাগ নিয়ে কাজ করে তেমনি জাভাস্ক্রিপ্টের অসংখ্য function, method, property ইত্যাদি আছে যার কারণে HTML, CSS এর মতোই একে reference language হিসেবে শিখতে হবে, আসলে এভাবে শিখলে ব্যপারটা অনেক সহজ হয়ে আসে। যারা C ল্যাঙ্গুয়েজ এর সাথে পরিচিত অর্থাৎ যারা C এর একটু-আধটু শিখেছেন তাদের জন্য জাভাস্ক্রিপ্ট এর প্রাথমিক ব্যপারগুলো শেখা পান্তাভাত ছাড়া আর কিছুই না। তাই আমি বলব যেকোনো প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ অথবা স্ক্রিপ্টিং ল্যাঙ্গুয়েজ শেখার আগে C এর অন্তত প্রাথমিক অর্থাৎ মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা নেয়া উচিত। একে অযথাই Mother of all Programming Language” বলা হয় না। জাভাস্ক্রিপ্ট শেখা শুরু করেছেন মানে আপনি প্রোগ্রামিং এর দুনিয়ায় পদার্পণ করেছেন অথচ প্রোগ্রামিং কি তাও যদি আপনি ভালোভাবে বুঝতে না পারেন তাহলে পদে পদে আপনাকে ক্ষান্ত হতে হবে, সেক্ষেত্রে বিরক্ত হয়ে পরে শেখাটাই বাদ দিয়ে দিবেন, এটাই স্বাভাবিক( আমি নিজেও একই পরিস্তিতির শিকার )শুধু প্রোগ্রামিং এর সংজ্ঞা জানলেই হবে না, প্রোগ্রামিং জিনিসটা কি তা ভালোভাবে নিজ থেকেই বুঝতে হবে আর এর জন্য শ্রেষ্ঠ উপায় হল অন্তত এক মাস C নিয়ে ঘাটাঘাটি করা। এভাবে শিখতে থাকলে বা প্রাকটিস করতে থাকলে আপনার নিজের ভিতরেই প্রোগ্রামিং এর একটা সহজ, ত্রিমাত্রিক সংজ্ঞা তৈরি হবে আর তখনই আপনি বুঝতে পারবেন প্রোগ্রামিং এর মৌলিক ব্যপারটা আপনি বুঝে ফেলেছেন। তাছাড়া জাভাস্ক্রিপ্ট হচ্ছে একটি Object Oriented Programming Language( OOP ), যেসকল ল্যাঙ্গুয়েজ object নিয়ে কাজ করে তাদেরকে Object Oriented বলা হয়। প্রোগ্রামিং বা স্ক্রিপ্টিং ল্যাঙ্গুয়েজ সাধারণত দুই প্রকার- action বা function oriented( C, Fortran ইত্যাদি ) আর object oriented( C++, Java, Javascript, Python, PHP, Ruby, Objective C, C# ইত্যাদি ) । শেষেরটা function কে নিয়ে কাজ করে। যেকোনো OOP ল্যাঙ্গুয়েজ শেখার আগেই AOP ল্যাঙ্গুয়েজ শিখে নেয়া উচিত কারণ প্রথমেই OOP শিখতে গেলে আপনার কাছে ব্যপারটা অনেক জটিল মনে হবে আর প্রত্যেকটা কোডের অর্থও কখনো শতভাগ বুঝতে পারবেন না, কন্সেপ্টটা ভাসা ভাসাই থেকে যাবে। এটা নিশ্চয়ই আপনার জানা আছে যে ভাসা ভাসা জ্ঞানের স্থায়িত্ব কখনোই দীর্ঘ হয় না আর তা ব্যক্তির আত্মবিশ্বাসও অনেকটা কমিয়ে দেয়

এখানে দুটি কথা অবশ্যই বলে রাখা বাঞ্ছনীয়, প্রথমত C ভালোভাবে শিখতে হলে আপনাকে কমপক্ষে ছয়মাস সময় দিতে হবে, যেহেতু আপনি জাভাস্ক্রিপ্ট শিখতে চাচ্ছেন আর এটাই আপনার মুখ্য উদ্দেশ্য তাই আপনার C ল্যাঙ্গুয়েজ এর উপর বেসিক ধারণা থাকেলই চলবে আর এর জন্য এক মাসের বেশি লাগার কথা নয়। দ্বিতীয়ত HTML, CSS কে দয়া করে প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ এর দলে ফেলবেন না কারণ এদের প্রথমটি হচ্ছে markup ল্যাঙ্গুয়েজ আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে markup করার পর এর স্টাইল দেয়ার জন্য, যদিও তাদেরকে সার্বজনীনভাবে স্ক্রিপ্টিং ল্যাঙ্গুয়েজ” এর দলে ফেলা হয়

আর হে C শিখতে আপনি যতটুকু আনন্দ পাবেন জাভাস্ক্রিপ্ট শিখতে তার সিকিভাগও পাবেন না বরং বিরক্ত হবার কথা। তাই প্রথমে C শিখে জাভাস্ক্রিপ্ট শেখার সময়টাকে রিডিউস করে নেয়াই ভালো। C শেখাটা আপনার হবিও হতে পারে কিন্তু জাভাস্ক্রিপ্ট আপনি শিখবেন প্রফেশনাল কাজ করার উদ্দেশে।

## একেবারে প্রথমেই আমি HTML, CSS কে কিভাবে reference এর ভিত্তিতে সহজে ব্যবহার করা যায় তা বলার চেষ্টা করেছি, যদিও আমার জাভাস্ক্রিপ্ট নিয়ে লেখার কথা। এর কারণ Document Object Model ( DOM ) নামের একটা ব্যপার আছে যেটা স্ক্রিপ্টিং ল্যাঙ্গুয়েজ( জাভাস্ক্রিপ্ট হতে হবে এমন কোনো কথা নাই ) এর সাথে যুগপৎ হয়ে কাজ করে। এর সাহায্যে HTML এর যেকোনো ট্যাগ কে object হিসেবে ধরে নিয়ে কাজ করা যায়, এভাবে করলে অনেক জটিল কাজ সহজে হয়ে যায়। Object কি তা আমি আগেই বলেছি, যেহেতু এটা কোনো টিউটরিয়াল নয় তাই আমি এখানে object বা action এর কোনো ব্যাখা বা উদাহারণ দেবনা।

## প্রথম থেকেই আমি reference শব্দটি অনেকবার ব্যবহার করে আসছি কিন্তু আসল রেফারেন্সই এতক্ষণ ধরে দেয়া হয়নি, আমি বলেছিলাম reference এর ভিত্তিতে জাভাস্ক্রিপ্ট শিখলে শেখাটা অনেক সহজ হয়ে যায়। এখন আসি আসল reference এর কথায়। প্রথমেই বলে নেই reference শব্দটির দ্বারা আমি আসলে কি বুঝাতে চেয়েছি। জাভাস্ক্রিপ্ট কিংবা অন্য যেকোনো কিছু শেখার সময় আপনি অবশ্যই বিভিন্নরকম বই পড়বেন বা অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের শরণাপন্ন হবেন? এখানে reference বলতে আমি এইসব বই কিংবা ওয়েবসাইটকেই বুঝাচ্ছি। এরকম অনেক বই( হার্ডকপি বা সফটকপি ) বা ওয়েবসাইট রয়েছে যেখান থেকে আপনি জাভাস্ক্রিপ্ট শেখা শুরু করে দিতে পারেন। তবে বাংলা টিউটরিয়ালের শরণাপন্ন না হয়ে ইংরেজি বই বা ওয়েব টিউটরিয়ালের দিকে ঝুঁকাই ভালো কারণ ইংরেজিতে আপনি জাভাস্ক্রিপ্টের আগাগুড়া সবকিছুই পাবেন যেমন- www.w3schools, www.developphp.com কিংবা জাভাস্ক্রিপ্টের অফিসিয়াল ডকুমেন্টেশনে আপনি এর সবকিছুই পাবেন, এরকম কোনো একটি সাইট কিংবা কয়েকটা বইকে জাভাস্ক্রিপ্টের টিউটরিয়াল+রেফারেন্স দুটি হিসেবেই কাজে লাগাতে পারবেন। তাছাড়া এরকম সাইট এ আপনি জাভাস্ক্রিপ্টের সকল আপডেট তথ্যও পাবেন। এখানে আরেকটা কথা যোগ করা প্রয়োজন- অনেকেই আছেন যারা ভিডিও টিউটরিয়াল দেখে শিখতে বা কাজ করতে বেশি পছন্দ করেন কিন্তু জাভাস্ক্রিপ্ট শেখার ক্ষেত্রে ভিডিও টিউটরিয়াল উপযুক্ত নয় কারণ জাভাস্ক্রিপ্টর পাল্লা অনেক দীর্ঘ, কোনো ভিডিও টিউটরিয়ালই এর সম্পূর্ণটা কাভার করতে পারবে না। তবে ভালোভাবে এর বেসিকটা শেখার পর বিভিন্ন ধরণের ওয়েব অ্যাপ্লিকেশান তৈরি করার সময় কিংবা বিভিন্ন ধরণের ফ্রেমওয়ার্ক নিয়ে কাজ করার সময় ভিডিও টিউটরিয়ালের( lynda, tutplus, infiniteskills, youtube ইত্যাদি ) সাহায্য নেয়া যেতে পারে।
## ফ্রেমওয়ার্ক: যারা CSS ভালোভাবে শিখেছেন তারা ফ্রেমওয়ার্ক শব্দরটিত সাথে পরিচিত। আপনারা হয়তো CSS এর দু-চারটা ফ্রেমওয়ার্ক নিয়ে কাজও করে থাকবেন। আসলে ফ্রেমওয়ার্ক হচ্ছে বিশেষ বা নির্দিষ্ট কোনো কাজের জন্য একটা স্বয়ংসম্পূর্ণ প্লাটফর্ম যাতে করে কাজটা সহজে, অল্প সময়ে এবং শতভাগ কার্যকরভাবে করা যায়। জাভাস্ক্রিপ্ট হোক, CSS হোক বা অন্য কিছুই হোক ফ্রেমওয়ার্কের সংজ্ঞা একই। কয়েকটা উদাহারণ দিলে হয়তো ব্যপারটা সহজেই বুঝতে পারবেন-- CSS নিয়ে ওয়েবসাইট ডিজাইন করার সময় সাইটটিকে রেস্পনসিভ করার কাজে Less Framework খুব বেশি ব্যবহৃত হয়, আবার একটি উৎকৃষ্ট মানের এবং রেস্পনসিভ ওয়েবসাইট ডিজাইন করতে Bootstrap নামক একটি ওপেন সোর্স ফ্রেমওয়ার্ক অনেক কাজের। এখন কথা হচ্ছে ওয়েবসাইট ডিজাইন তো HTML, CSS দিয়ে এমনিতেই করা যায় তাহলে অযথা ফ্রেমওয়ার্কের ঝামেলা করার দরকার কি? এর উত্তর অবশ্য আমি আগেই দিয়েছিলাম, আপনি যদি এই ওয়েবসাইট ডিজাইনের ক্ষেত্রে Bootstrap ব্যবহার করেন তাহলে একসাথে অনেক সুবিধা পাবেন আর তা হল- () আপনার অনেক সময় বাঁচবে আপনি যদি প্রফেশনাল হয়ে থাকেন তাহলে সময়টা আপনার কাছে অনেক বড় একটা ফ্যাক্ট। () আপনার ডিজাইনটি নিট অ্যান্ড ক্লিন থাকবে এবং এর কার্যকারিতা থাকবে শতভাগ। () আপনার ওয়েবসাইট একই সাথে রেস্পনসিভ( এক সাথে অনেক ডিভাইসের জন্য কার্যকরী ) হয়ে যাবে। () আর সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে আপনার কাছে কাজটা অনেক সহজ হয়ে উঠবে, আপনি যদি CSS ভালোভাবে নাও জানে তারপরও প্রফেশনালদের মত কাজ করতে পারবেন।
আমি Bootstrap ফ্রেমওয়ার্কের মাধ্যমে আপনাদেরকে ফ্রেমওয়ার্ক সম্পর্কে একটা ধারনা দিতে চেয়েছি। এক-এক ফ্রেমওয়ার্কের সুবিধা, কাজের ধরণ এবং উদ্দেশ্য একেক রকম।
এখন আসি জাভাস্ক্রিপ্টের ফ্রেমওয়ার্কের কথায়। এতক্ষণ ফ্রেমওয়ার্ক নিয়ে যা যা বলেছি তা জাভাস্ক্রিপ্ট ফ্রেমওয়ার্কের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
জাভাস্ক্রিপ্টের ফ্রেমওয়ার্কগুলা যে জাভাস্ক্রিপ্ট দিয়েই তৈরি হতে হবে এমন কোনো নেই, তবে সাধারণত কোর পার্টটা জাভাস্ক্রিপ্ট দিয়েই হয়ে থাকে, যার কারণে আপনি ভালোভাবে জাভাস্ক্রিপ্ট পারলেও ফ্রেমওয়ার্ক আবার নতুন করে শিখতে হবে। তবে ফ্রেমওয়ার্ক শেখার ক্ষেত্রেও আপনি একই পন্থা অবলম্বন করবেন অর্থাৎ রেফারেন্স হিসেবে শিখবেন আর এর জন্য ফ্রেমওয়ার্ক এর অফিসিয়াল ডকুমেন্টেশনই হচ্ছে বেস্ট। জাভাস্ক্রিপ্টের অধিক ব্যবহৃত কয়েকটা ফ্রেমওয়ার্ক সম্পর্কে নিচে কিছু তথ্য দেয়া হল--
jQuery: সাধারণত animation, slider ইত্যাদি নিয়ে কাজ করার জন্য ব্যবহৃত হয়, এটাকে javascript library বলা হয়। jQuery Mobile দিয়ে স্মার্টফোন, ট্যাবলেট ইত্যাদির জন্য বিভিন্ন ধরণের অ্যাপ্লিকেশান তৈরি করা হয়।
AJAX( Asynchronous JavaScript and XML ): এটাও জাভাস্ক্রিপ্টের একটি অতি পরিচিত ফ্রেমওয়ার্কAJAX এর মূল কাজ হচ্ছে সার্ভারে ডাটা আদান-প্রদান করা, কোনো একটি ওয়েব পেজের সম্পূর্ণ লোড না করে নির্দিষ্ট অংশ আপডেট করা।
AngularJS: single page Application এর জন্য এটি অত্যন্ত কার্যকরী। এটা শেখাও খুব সহজ।
JSON( JavaScript Object Notation ): এটা XML এর পরিবর্তে শেখা যেতে পারে, এটাও syntex-এর ভিত্তিতে ডাটা বিনিময়ের কাজ করে থাকে
তাছাড়াও Encoder, Meteor ইত্যাদি জাভাস্ক্রিপ্টের আরও অনেক ফ্রেমওয়ার্ক আছে।

Google Maps API নিয়ে কাজ করার জন্যও জাভাস্ক্রিপ্ট অতুলনীয়।

শেষবেলা এসে আমি এই কথাটাই বলব যে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং শুধুমাত্র কয়টা লজিক এর ভিত্তিতে কাজ করে অর্থাৎ যত ভালোভাবে এলগরিদম ডিজাইন করতে পারবেন আপনি ততোই ভালো প্রোগ্রামার হতে পারবেন। জাভাস্ক্রিপ্ট যেহেতু প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজের অন্তর্ভুক্ত এটির বেলায়ও তাই কথাগুলো প্রযোজ্য। আপনি যদি এলগরিদমের ব্যপারটা বাদ দিতে চান তাতেও কোনো সমস্যা নেই কিন্তু সেক্ষেত্রে আপনি স্বনির্ভরতা হারাবেন অর্থাৎ আপনি ওয়েব অ্যাপ্লিকেশান তৈরি করতে পারবেন ঠিকই কিন্তু নিজের তৈরি লজিক আর এলগরিদমের সাহায্যে কোনো অ্যাপ্লিকেশান বা সফটওয়্যার তৈরি করার যে আনন্দ তা থেকে অবশ্যই বঞ্চিত হবেন। এলগরিদমের ব্যপারটা নিজের কাছে স্পষ্ট করার জন্য সবচেয়ে উত্তম ল্যাঙ্গুয়েজ হচ্ছে C.

সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

চেতনার পূর্বপদ

বিগত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দক্ষিণ এশিয়ার এই অঞ্চলটিতে “চেতনা” কে সর্বাধিক আলোচিত একটি শব্দ বলা চলে। এই সময়ের মধ্যে কেউ বুঝে, কেউ না বুঝে, সময়ে, অসময়ে এই শব্দটিকে অনেকবার ব্যাবহার করেছেন। “চেতনা” শব্দটির পূর্বে যখন বিশেষ কিংবা ঐতিহাসিক কোনো ঘটনা বা সময় যুক্ত হয় তখন এর তাৎপর্য এমনকি মাহাত্ম্য কয়েক গুন বেড়ে যায়। চেতনার সাথে আমরা যে দুটি শব্দ সচরাচরই ব্যাবহার করি বা করে আসছি তা হল মুক্তিযুদ্ধ(ঘটনা) বা একাত্তর(সময়) আর ধর্ম, আরও স্বতন্ত্রভাবে বলতে গেলে ইসলাম ধর্মের চেতনা। একাত্তরের চেতনা আর ধর্মের চেতনা দুটিই আমাদের জন্য সম গুরুত্বপূর্ণ। একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে দুটির কোনোটিকেই আমি ফেলতে পারব না। কিন্তু এক শ্রেণীর লোকের কারণে আরও সঠিকভাবে বলতে গেলে দুই শ্রেণীর লোকের কারণে(অথবা তার চেয়েও বেশি) আমাদের ধর্ম চেতনা আর মুক্তির চেতনার মধ্যে দ্বন্দ্ব পাকিয়ে গেছে। অথচ এদের মধ্যে আদৌ কোনো তফাৎ নেই কারণ এর দুটিই আমাদের আত্মার চেতনা। মানুষ হিসেবে আমাদের দুটি হাত থাকতে পারে (থাকাটাই স্বাভাবিক) কিন্তু আমাদের মনন-মস্তিষ্ক, হৃদয় কেবল একটাই। দুটি হাত ছাড়া যেমন কোনো কাজই সুচারুভাবে করা সম্ভব নয় তেমনি ধর্ম আর মুক্তি চেতনাদ্বয়ের কোনো একটিকেই ত্যাগ করলে আমাদের অনেকটা পত্রবিহীন ডাল অথবা চাকাবিহীন গাড়ির মতোই অবস্থা হবে। আজকাল অনেকেই চেতনা শব্দটিকে ট্রাম কার্ডের মতো ব্যাবহার করেন আবার অনেকেই শব্দটিকে রাজনীতির বোর্ডে শক্ত গুটি হিসেবে ব্যাবহার করেন, সাধারণ মানুষেরা যদি দ্বিধার আগুনে পুড়ে ছাইও হয়ে যায় কিংবা সংকোচের জলে ডুবে যদি তাদের দম বন্ধ হয়ে আসে তবুও এই শ্রেণীর লোকদের কিছু যায়-আসে না। কিছু যায়-আসার কথাও নয় কারণ যত বেশি দ্বিধা, যত বেশি দ্বন্দ্ব তত বেশি প্রভাব আর প্রতিপত্তি, যত বেশি গুঞ্জণ তত বেশি মনোরঞ্জণ। আর এই শ্রেণীর লোকদের কারণেই যারা চেতনা আসল মর্মার্থ ধরতে পেরেছেন কিংবা যারা সত্যিকারেই ধর্ম আর একাত্তরের চেতনাকে(অথবা যেকোনো একটি) সবার মধ্যে বিলিয়ে দিতে চান তাদের নামও খারাপ হচ্ছে। আর তাই সাধারণ লোকেরা আসল চেতনাধারিদেরকে, চেতনাবাজদের থেকে আলাদা করতে পারে না। ইসলামের চেতনা মানেই মুক্তির বিরোধী নয় আর একাত্তরের চেতনা মানেই ইসলাম বিরোধী নয় এই জানা সত্যটিই আমদের কাছে এখন অজানা হয়ে গেছে, আমরা এখন বুঝেও অবুঝ।

চেতনা আত্মিক একটা বিষয়, এটা সবার অন্তরকেই পরিশোধিত করে বা করতে পারে, যদি না আমরা এটাকেই দূষিত করে ফেলি। মাইক নিয়ে চিৎকার-চ্যাঁচামেচি করলেই চেতনার প্রসার হয় না, এর জন্য প্রয়োজন আত্মার শুদ্ধি। যেভাবে চলছে, মনে হয় পরবর্তী প্রজন্ম একটা অসুখেই ভোগবে আর তা হল দ্বিধা।

হঠাৎ করে চেতনা নিয়ে এতো বকবক করার একটাই কারণ, সেদিন বাসার সামনের রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় দুইটা ছেলের কথোপকথন কানে এল— একটা ছেলে আরেকটা মাদ্রাসায় পড়ুয়া ছেলেকে মুক্তি বিরোধী বলে গালি দিচ্ছে কারণ ছেলেটি সবসময় পাঞ্জাবি আর মাথায় টুপি পরে থাকে আর এর জবাবে ঐ ছেলেটিও অন্যটিকে ইসলাম বিরোধী বলে গালি দিচ্ছে। এখনকার বাচ্চা ছেলেরাও বিরোধী শব্দের ব্যাবহার শিখে ফেলেছে!! তাদের কথা শুনে পিত্তি জ্বলে গেল, তাই পিত্তি ঠাণ্ডা করার জন্য এতো বকবক করলাম।

পৃষ্ঠাসমূহ

Pages

Recent Articles